কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলায় বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর সকাল ১১.০০ ঘটিকায় কৃষি খাতকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে সরকারিভাবে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ করা হয়। রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুন্নাহার সাথী'র উপস্থিতিতে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হৈমন্তী রানী কৃষকদের মাঝে এ প্রণোদনার ধান বীজ করেন। বিতরণকালে তালিকাভুক্ত ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত করেই বিতরণ করার কথা বলেন। তিনি বলেন তালিকাভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ ধান বীজ গ্রহণ করতে পারবেনা, এমনকি স্বামীর পরিবর্তে স্ত্রী, স্ত্রীর পরিবর্তে স্বামী, পিতার পরিবর্তে পুত্র, পুত্রের পরিবর্তে পিতাকেও বিতরণ করা হবে না। তার এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ কৃষকদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ব্যপক প্রতিক্রিয়া।

বেলা দুই ঘটিকার সময় উপজেলা চত্বরে কৃষি অফিসের সামনে থেকে ধান বীজ বিতরণ করার সময় উক্ত স্থানে গিয়ে দেখা যায় সাধারণ কৃষকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজমান। অনেকের দাবি তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রণোদনার তালিকায় নাম থাকলেও পরিবারের একজন বীজ নিতে আসে। এসময় বাড়ির সদস্যরা নানা ধরনের শাকসবজি চাষের কাজে ব্যস্ততার কারণে সকলে আসতে পারেনি। এসেই যেন বিপাকে পড়তে হচ্ছে বীজ নিতে আসা সাধারণ কৃষকদের। ভুক্তভোগীদের মধ্যে বিদ্যানন্দ থেকে আছিমুদ্দীর ছেলে নাজমুল ইসলাম, রাজীব হোসেনের পিতা ইছাহাক আলী, চাকিরপশার ইউনিয়নয়ের বুলেট সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অনেকেই কৃষি কর্মকর্তার এমন কঠোর সিদ্ধান্তের নিন্দা জ্ঞাপন করছেন।

কৃষি এ কর্মকর্তার এমন সিদ্ধান্তের পরই দেখা গেল একজন কৃষককে তিনজনের বীজ গ্রহণ করতে। তিনজনের বীজ উত্তোলন করলে ওই কৃষকের কাছে জানতে চাওয়া হয় কার কার নামের বীজ উত্তোলন করেছেন। উত্তরে জানালেন তার সাথে আসা ছেলের তার নিজের ও তার স্ত্রীর নামের বীজ উত্তোলন করেছেন। কৃষকের স্ত্রী উপস্থিত না হয়েও কিভাবে ধান বীজ উত্তোলন করলেন উপস্থিত সাংবাদিকগণের এমন প্রশ্নের জবাবে হৈমন্তী রাণী বলেন " উনি একজনকে দেখিয়ে বীজ গ্রহণ করেছেন। যাকে দেখিয়ে বীজ উত্তোলন করেছে সে ওই কৃষকের স্ত্রী কি না এর জবাবে তিনি সাংবাদিকদের সাথে অপ্রাসঙ্গিক ও অসদাচরণ করেন। এদিকে বাবার নামের ধান বীজ তুলতে আসা ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ব্যপক ক্ষোভে ফেটে পড়েছে উপজেলার দুর্গম এলাকা থেকে আসা কৃষকরা।

কৃষকদের মাঝে ধান বীজ বিতরণের এমন অনিয়মের ঘটনার বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুন্নাহার সাথী'র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এবিষয়ে মিডিয়ায় কথা বলতে নারাজ। রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসিয়াল ফোন নম্বরে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।