• ঢাকা
  • রবিবার , ২৮ এপ্রিল ২০২৪ , বিকাল ০৫:৩৭
ব্রেকিং নিউজ
হোম / অন্যান্য

কুড়িগ্রামে মাচায় শিম চাষ, বেগুনি ফুলে কৃষকের মুখে হাসি

রিপোর্টার : নিজস্ব প্রতিবেদক
কুড়িগ্রামে মাচায় শিম চাষ, বেগুনি ফুলে কৃষকের মুখে হাসি প্রিন্ট ভিউ

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের উলিপুরে অল্প খরচে মাচা পদ্ধতিতে শিম চাষ করে দ্বিগুণের বেশি লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা। ফলনে ও দামে খুশি চাষিরা। রঙিন ফুল আর সবুজ ফলের সঙ্গে শিম চাষির মুখে ফুটে উঠেছে মিষ্টি হাসি। বেগুনি রঙের মনোমুগ্ধকর ফুলে প্রকৃতি সেজেছে দারুণ মুগ্ধতায়। মৌসুম শুরুর আগে থেকেই মাচায় ভরে গেছে শিম বাগান।

চলতি রবি মৌসুমে শিমের মাচায় দুলছে চাষির স্বপ্ন। আগাম শিম চাষ করে ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন শিম চাষিরা।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় সবজি চাষের লক্ষ্য মাত্রা প্রায় ১ হাজার ৫০ হেক্টর। এর মধ্যে শিম চাষও রয়েছে। শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম শিম।

এখন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে আগাম জাতের শিম। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে বেশী লাভ হওয়ায় দিন দিন এই আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। এছাড়া শিম চাষিদের উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই পোকামাকড় নিধন সম্পর্কে পরামর্শ দেয়া অব্যাহত রয়েছে। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আগাম জাতের শীতকালীন সবজি শিমের মাচা। ছড়ায় ছড়ায় ঝুলছে শিম।

শ্রাবণ মাসের প্রথম দিকে এই শিমের বীজ বপন করতে হয়। চারা বের হওয়ার ২৫ থেকে ৩০ দিনের মাথায় গাছে ফুল আসা শুরু হয়। দেড় মাস বয়সের গাছ থেকে শিম তোলা শুরু হয়। আগাম শিম বাজারে নামাতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে এমন প্রত্যাশা কৃষকদের। তাছাড়া প্রায় বাড়িতে মাচা কিংবা গাছে শোভা পাচ্ছে শিম। গৃহিণীরা সাংসারিক প্রয়োজন মেটানোর পর শিম বিক্রি করে তারা বাড়তি টাকা আয় করছেন।

উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের নেফড়া এলাকার খাজ্যা গ্রামের সবজি চাষি মকবুল হোসেন জানান, তিনি নিজেকে একজন সফল শিম চাষি হিসেবে গড়ে তুলেছেন। বর্তমানে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সারাদিন শিমের মাচায় হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে বিক্রির পাশাপাশি পারিবারিক পুষ্টি চাহিদাও পুরুন করছেন। গত বছর অল্প টাকা খরচ করে শিম চাষ করে প্রায় দ্বিগুণ টাকা আয় করেছেন। এবারে এক বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত উৎপাদিত শিম বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩০ হাজার টাকা। আরও ১৫ হাজার টাকার শিম বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।

এখানকার মাটি ও আবহাওয়া শিম চাষের উপযোগী হওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে। অন্যদিকে চাহিদা থাকায় দামও আশানুরূপ। প্রতি কেজি শিম পাইকেরিতে বিক্রি করছি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আগামীতে আরও এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের শিম চাষ করবেন বলে জানান তিনি। তার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই শিম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শিম চাষিদের মধ্যে মতিন মিয়া, মেহের আলী, জামাল উদ্দিন, রুহুল আমীন ও কাজিম মিয়া জানান, গত বছর আমরা অনেকেই সবজি চাষ করে দাম না পেয়ে ঋণে জর্জরিত ছিলাম। এবারে আগাম জাতের শিমসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে ভালো দাম পাওয়ায় অনেকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছি। তারা আরও বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূল ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব না থাকায় শিমের বাম্পার ফলনে চাষিরা অনেক আনন্দে রয়েছেন বলে জানান তারা।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, আমার ব্লকে অনেক কৃষক শিম চাষ করেছেন। শিমের ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। শিম চাষিদের বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই ও পোকামাকড় নিধন সম্পর্কে পরামর্শ দেয়া অব্যাহত রয়েছে। বাম্পার ফলন ও বাজার দর ভালো থাকায় শিম চাষিরা অনেক লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মো. মোশারফ হোসেন জানান, শিম প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি সবজি। এর বিচিও সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। তাই বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। শিম চাষিরা বেশ লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।

সারাদেশ

সফলতার গল্প

আরও পড়ুন