• ঢাকা
  • রবিবার , ২৮ এপ্রিল ২০২৪ , রাত ০১:২৯
ব্রেকিং নিউজ
হোম / অন্যান্য

কুড়িগ্রামে কৃষিজমির মাটি ইট ভাটায়

রিপোর্টার : নিজস্ব প্রতিবেদক
কুড়িগ্রামে কৃষিজমির মাটি ইট ভাটায় প্রিন্ট ভিউ

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় শ্রমিক দিয়ে আবাদি জমির উপরি ভাগের মাটি কেটে শতাধিক ট্রাক্টর দিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইট ভাটায়। এভাবে নির্বিচারে জমির মাটি কাটার ফলে আবাদি জমির উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে মাটির জৈব গুণাগুণ। নিচু হয়ে যাচ্ছে কৃষিজমি। ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ।

দরিদ্র কৃষকরা বাড়তি আয়ের আশায় ও অর্থের লোভে, আবার অনেকে নানা কারণে বাধ্য হয়ে মাটি বিক্রি করছে।

মাটি বিক্রি করা কয়েকজন জমির মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাড়তি আয়ের আশায় তাঁরা আবাদি জমির মাটি বিক্রি করছেন। দুই ফুট গভীর করে এক বিঘা জমির মাটি বিক্রি করলে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পাওয়া যায়।

নেফরা গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, "আমার জমির চারপাশের মাটি বিক্রি হয়ে যাওয়ায় নিজের জমি উচুঁ হয়ে চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ জন্য বাধ্য হয়ে ইট ভাটায় জমির মাটি বিক্রি করে দিয়েছি।"

উলিপুর উপজেলায় ২০টি ইটভাটা আছে। বেশির ভাগই রয়েছে তবকপুর, থেতরাই, দুর্গাপুর, ধামশ্রেণী ও পৌরসভায়। এসব ভাটার চাহিদা মেটাতে থেতরাই, তবকপুর, ধামশ্রেণী ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে নির্বিচারে আবাদি জমির উপরিভাগের মাটি কাটা হচ্ছে।

এক যুগ ধরে প্রকাশ্যে কৃষিজমির মাটি কাটা চলছে। ইটভাটা বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে ইটের চাহিদা। ভাটার মালিকরা হয়েছেন বেপরোয়া। অভাবী জমির মালিকদের অর্থের লোভে ফেলে তারা কেটে নিচ্ছে আবাদির জমির মাটি। অবাধে মাটি কাটার ফলে এসব ইউনিয়নের ১০ হেক্টর আবাদি জমি নিচু হয়ে গেছে।

সচেতন মহলের ভাষ্য, এভাবে জমির মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে একসময় কৃষিতে বিপর্যয় দেখা দেবে। কমে যাবে আবাদি জমির পরিমাণ। ট্রাক্টর মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, তাঁর চারটি ছোট ও চারটি বড় ট্রাক্টর রয়েছে। জমির মালিকের কাছ থেকে প্রতি গাড়ি মাটি ২৫০ টাকা করে কিনে ৭০০ টাকা দরে ভাটায় বিক্রি করা হয়।

উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, "আমরা সরাসরি মাটি আনি না। ট্রাক্টর মালিকরা মাটি ভাটায় দেয়।"

পরিবেশকর্মী ও রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, "মাটির গঠনে টপ সয়েল শস্য উৎপাদনে উপযোগী। এটা কেটে ফেলায় কৃষি, প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ নষ্ট হয়।"

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোশারফ হোসেন বলেন, "জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) দীর্ঘদিনে জৈব মাটি হিসেবে গড়ে ওঠে, যা উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। ওপরের মাটি সরিয়ে ফেললে নিশ্চিত উৎপাদন কমে যাবে। তবে উপজেলা ভূমি অফিস এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে।"

সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মাহমুদুর রহমান বলেন, "বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি। উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে মোবাইল কোর্ট করা হবে।"

সারাদেশ

আইন আদালত

আরও পড়ুন