• ঢাকা
  • শনিবার , ২৭ এপ্রিল ২০২৪ , রাত ০৯:৪৬
ব্রেকিং নিউজ
হোম / অন্যান্য

কুড়িগ্রামে দাপট দেখিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েও বেতন উত্তোলন ছাত্রলীগ নেতার

রিপোর্টার : নিজস্ব প্রতিবেদক
কুড়িগ্রামে দাপট দেখিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েও বেতন উত্তোলন ছাত্রলীগ নেতার প্রিন্ট ভিউ

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:

চাকুরির তথ্য গোপন করে এক নেতার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ। উপজেলার হাতিয়া ভবেশ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) পদে চাকুরি করেও তা গোপন করে ছাত্রলীগের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন ছাত্রলীগের ওই নেতা।

শুধু তাই নয়, ক্ষমতার দাপটে মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে যান না তিনি। তবে স্কুলের খাতায় নিয়মিত উপস্থিত দেখাতে স্বাক্ষর করেন। ২০২২ সালের ৬ জুলাই স্কুল এমপিও হওয়ার পর থেকে মাসে ২ থেকে ৩ বার স্কুলে গিয়ে পুরো সপ্তাহের স্বাক্ষর করেন। আর এভাবেই সরকারি কোষাগার থেকে নিয়মিত বেতন (এমপিও) উত্তোলনেরও অভিযোগ রয়েছে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এখন তার সেই চাকুরির খবর পুরো উপজেলায় ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

বিদ্যালয়ে নজরুলের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) পদে চাকুরি ও নিয়মিত বেতন (এমপিও) উত্তোলনের কথা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাঈদুল ইসলাম নিশ্চিত করলেও তার কর্মজীবন ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে কোন তথ্য দেননি তিনি। নজরুল স্কুলের নিয়মিত আসে না অথচ বেতন উত্তোলন করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে পরে সাক্ষাতে কথা বলবে বলে ফোনের সংযোগ কেটে দিয়েছেন তিনি।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে নজরুলের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) পদে নিয়োগ পেয়ে চাকুরিতে যোগদান করেন তিনি।

জেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন স্বাক্ষরিত একপত্রে নজরুল ইসলামকে সভাপতি ও মঈনুর রশিদ নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট উলিপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছে। সেই সময় হাতিয়া ভবেশ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) পদে চাকুরিরত থেকেও কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগকে না জানিয়ে তথ্য গোপন করে সম্প্রতি ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ উলিপুর উপজেলা শাখার 'সভাপতি' পদ পেয়েছেন তিনি।

অথচ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারায় বলা হয়েছে, যেকোন নিয়মিত শিক্ষার্থী (৫ এর ক উপ ধারা অনুযায়ী) ছাত্রলীগের কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য হতে পারে। বিবাহিত, ব্যবসায়ী ও চাকুরীতে নিয়োজিত কোন ছাত্রছাত্রী ছাত্রলীগের কর্মকর্তা হতে পারবে না।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার অভিযোগের বিষয়ে কোন বক্তব্য না দিয়ে সাক্ষাতে কথা বলতে চেয়ে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন নয়ন বলেন, তিনি চাকুরীতে কর্মরত এমন অভিযোগ পেয়েছি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে বিধি মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাতাব হোসেন বলেন, স্কুল নিয়মিত করেন না এমন অভিযোগ শুনেছি। এখন কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা ১০ ডেগ্রী সেলসিয়াসের নিচে থাকায় স্কুল বন্ধ রয়েছে। স্কুল খুললে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আতাউর রহমান বলেন, এখনও লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। যেহেতু বিদ্যালয়ে যান না, উপস্থিত দেখাতে খাতায় স্বাক্ষর করেন, নিয়মিত বেতন উত্তোলন করেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সারাদেশ

আইন আদালত

আরও পড়ুন