• ঢাকা
  • রবিবার , ২৮ এপ্রিল ২০২৪ , রাত ০৩:১৭
ব্রেকিং নিউজ
হোম / অন্যান্য

কুড়িগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ আশ্রয়ণ প্রকল্পে মানুষের বসবাস, নীরব প্রশাসন

রিপোর্টার : নিজস্ব প্রতিবেদক
কুড়িগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ আশ্রয়ণ প্রকল্পে মানুষের বসবাস, নীরব প্রশাসন প্রিন্ট ভিউ

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ আশ্রয়ণ প্রকল্পে শতশত মানুষ পরিবার নিয়ে বসবাস করছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগে সংস্কার না হলে আশ্রয়হীন হবার শংকায় এসব পরিবার।

তিস্তা নদী এবং ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বেস্টিত কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার বিচ্ছিন্ন চিলমারী ইউনিয়নের বিশার পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে ২০ টি ব্যারাকে ১২০ টি পরিবারের বসবাস। প্রায় ৫/৬ বছর আগে নির্মিত এসব ব্যারাক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১৮ টি চরের ৪৪৫ টি ব্যারাকে দুই হাজার ৩২৫ টি পরিবার ঝুঁকিতে জীবন যাপন করছে। গত বন্যা ও বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যারাক অনেকেই ঋণ করে সংষ্কার করে থাকলেও এবার আরও ঝুঁকিতে পড়েছেন। সহায় সম্বলহীন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসবাকৃত পরিবার গুলো। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগে সংস্কার না হলে আশ্রয়হীন হবার শংকায় পড়েছেন।

বিশার পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আছিমন বলেন, হামার ঘরবাড়ি সব নদীতে চলে গেছে। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে এই আশ্রয় প্রকল্পের মধ্যে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। এখন এসব ঘরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই ভেঙ্গে পড়ার শংকা আছে। বন্যা হলে তো আরও ভয়ংকর পরিস্থিতি হবে। এখন দুশ্চিন্তায় আছি সামনের দিন গুলো কি হবে?

আরেক বাসিন্দা পরিনা বেগম বলেন, গত বছর বৃষ্টির পানিতে মাটি ধুয়ে আমার থাকার ঘরের সামনে বড় একটি কুড়া(গর্ত) পড়ে। পরে সুদের পর ৪০ হাজার টাকা নিয়ে সেই জায়গার মাটি ভরাট করেছি। কিন্তু টেশসই হয় নাই। কোন রকমে আছি আবাসনের মধ্যে। এই বন্যার আগে আবাসন ঠিক করা না গেলে হামাক গুলাক খোলা আকাশের নিচে থাকা লাগবে।


আরেক বাসিন্দা জোবায়দুল ইসলাম বলেন,এই আবাসনের মধ্যে ১২০ পরিবার থাকি। কম বেশি সব গুলো ঘরেই সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে পানি নামার রাস্তা না থাকায় আবাসনের প্রায় ২৫/৩০ টি ঘর অতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। মেঝের তল থেকে মাটি খসে গেছে। ঘরের সিড়ি ভেঙ্গে গেছে। এমন হাজারো সমস্যা নিয়ে আমাদের বসবাস করতে হচ্ছে।

অপর বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মিত হলেও গাইড ওয়াল এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর বৃষ্টি এবং বন্যায় বালু মাটি ধুয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছে সরকারের বৃহৎ এই প্রকল্প। আশ্রিত এসব ব্যারাক ভেঙ্গে গেলে শতশত মানুষ তাদের পরিবার নিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়বে। তার দাবী সরকারী ভাবে দ্রুত এসব ব্যারাক সংস্কার করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে।

চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন,ইতোমধ্যে আমার ইউনিয়নে ১০ টি আশ্রয়ন প্রকল্পের মধ্যে একটি ভেঙ্গে গেছে। আর বাকিগুলো ঝুর্কিপূর্ণ অবস্থায় আছে। আমাদের এদিকে বন্যা এবং রেইন কাট বেশি হওয়ায় আবাসন গুলো খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দ্রুত এগুলো সংস্কার করা না গেলে প্রায় ৭/৮শ পরিবার হুমকিতে পড়ার শংকা রয়েছে।

চিলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ রুকুনুজ্জামান শাহিন বলেন, চিলমারী উপজেলায় নির্মিত এসব আশ্রয়ন প্রকল্পে নির্মাণ করার দীর্ঘদিন পার হলেও বরাদ্দ না থাকায় এসব সংস্কার সম্ভব হয়নি। সরকারি ভাবে বরাদ্দ দিয়ে দ্রুত এসব ব্যারাক সংস্কার করে বসবাসের উপযোগি করে তোলার দাবী জানান তিনি।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুল ইসলাম জানান, আবাসন প্রকল্পের যে সব ব্যারাক ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে তা সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই সংস্কার কাজ শুরু হবে।

সারাদেশ

আরও পড়ুন