আব্দুল হালিম সরদার, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:
সীমান্ত হত্যা ও আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে প্রতীকী লাশ কাঁধে নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ‘লাশের মিছিল’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) দুপুর থেকে হানিফ নামে এক বাংলাদেশী যুবকের নেতৃত্বে টেকনাফ পৌরসভার জিরো পয়েন্ট (শাপলা চত্বর) এলাকা থেকে এই কর্মসূচি
শুরু হয়। প্রতীকী লাশের মিছিলে মো. নুরুল আজিম, মো. সৌরভ, আবু নাসিম ও মো আরিফসহ মোট চারজন রয়েছেন।
সীমান্তে হত্যা বন্ধ কর' লেখা সংবলিত প্লেকার্ড প্রদর্শন পূর্বক প্রতীকী ‘লাশের প্রতিবাদ মিছিলটি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্তের ৭২টি উপজেলা ও ৩২টি জেলা প্রদক্ষিণ করবে এবং এমন সব জেলা ও উপজেলাগুলোতে প্রতিবাদ জানাবে বলে জানা গেছে। পরে যশোরের বেনাপোল উপজেলায় গিয়ে শেষ হবে। প্রথম দিনে টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলা হয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছে মিছিলটি।
ভারত বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে হত্যা বন্ধের দাবীতে প্রতিবাদ মিছিল আয়োজনকারী বাংলাদেশী যুবক হানিফ বলেন, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দুইটা দেশ ভারত ও মিয়ানমার। সব সময় বাংলাদেশের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত সব সময় সীমান্তে নিরীহ মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করছে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের একজন বিজিবি সদস্যকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। গত ৪ মাসে ভারত সীমান্তে ২১ জন বাংলাদেশি বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন মানবাধিকারের অধিকারের হিসাবে ২০১০ সাল থেকে প্রায় ১ হাজার ২৭৬ জন বাংলাদেশিকে বিএসএফ হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন ১ হাজার ১৮৩ জন। আরেক প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার তাদের ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে অত্যাচার করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ যুদ্ধে মর্টার শেলে দুজন মারা যান। এর মধ্যে একজন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছে। সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার পরে বলা হয় এরা গরু চোরাকারবারি হতে পারে। এরা গরু চোরাকারবারি, এদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক গুলি করে হত্যা করবে কেন? ভারত ও মিয়ানমার যদি তাদের দেশের পাচারকারীদের দমন করে তাহলে বাংলাদেশের পাচারকারীরা এমনিতে বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। এর আগেও সীমান্ত আগ্রসনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে প্রতীকী লাশ কাঁধে নিয়ে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম পদযাত্রা করেছেন আন্দোলনকারী যুবক হানিফ।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যে দলই এসেছে, সে দলই দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের মানুষের আত্মমর্যাদা বিসর্জন দিয়ে বিদেশিদের দ্বারস্থ হয়েছে। শাসকদের এই দুর্বল নতজানুর কারণে ভারত ও মিয়ানমার সব সময় বাংলাদেশের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। বিদেশি অন্য দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর তাঁবেদারি করার সাহস পাচ্ছে। নতুন প্রজন্ম ও কোনো দেশের আগ্রাসন মেনে নেবে না। বাংলাদেশের মানুষ আর্তমর্যাদা নিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায়।
চলমান এই আন্দোলন কর্মসূচিতে দেশবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা এবং দেশের সচেতন মানুষদের অংশগ্রহণ করে যেদিন যেসকল জেলা, উপজেলায় মিছিল যাবে সেদিন সেই এলাকার স্থানীয়, সামজিক ও সেচ্ছাসেবী সকল সংগঠনকে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের আহ্বান করেছেন মিছিলকারীরা।