• ঢাকা
  • মঙ্গলবার , ৭ মে ২০২৪ , রাত ০২:৫১
ব্রেকিং নিউজ
হোম / আবহাওয়া

বন্যা আতঙ্কে তিস্তাপাড়ের মানুষ; জরুরি সভা

রিপোর্টার : আমিনুল ইসলাম
বন্যা আতঙ্কে তিস্তাপাড়ের মানুষ; জরুরি সভা প্রিন্ট ভিউ

আমিনুল ইসলাম (গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ

উজানের ঢলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি ৩২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। বর্তমানে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ভারতীয় সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উজানে তিস্তা নদীর পানি সমতলে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল ৯টার তথ্য অনুযায়ী তিস্তা নদী কাউনিয়া পয়েন্টের পানি সমতল ২৯. ১৫ মি. (বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার নিচে), যা আগামীকাল ভোর নাগাদ বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকাসমূহ প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

ভারতীয় আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সিকিম অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতের থাকায় তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে এবং পরবর্তীতে সর্বোচ্চ পানি সমতলের (৫২.৮৪ মি) কাছাকাছি পৌছাতে পারে। বন্যার এই পূর্বাভাস পাওয়ার পর সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন তিস্তা নদী বেষ্টিত চর ও নিচু অঞ্চলের মানুষকে দ্রুত উঁচু স্থানে সরিয়ে যাওয়ার জন্য বিকেল থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় মসজিদ থেকেও চলছে মাইকিং।

নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হচ্ছে। আকষ্মিক পানি বৃদ্ধিতে বন্যার শঙ্কায় রয়েছে। চলতি মৌসুমে কয়েক দফায় বন্যা হলেও তা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না। মৌসুমের শেষ দিকে বন্যায় ব্যাপক ফসলহানি, বসতবাড়ি, গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। এদিকে সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির আয়োজনে বন্যার পূর্বাভাস নিয়ে আগাম প্রস্তুতি ও বন্যার সময় করণীয় বিষয়ক এক জরুরি সভা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম সরকার লেবু, উপজেলা প্রকৌশলী মো. শামসুল আরেফীন খান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ওয়ালিফ মণ্ডল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. খোকন রানা, বেলকা ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ, তারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, দহবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল আলম রেজা, কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনজু মিয়া, হরিপুর, চন্ডিপুরও শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা। বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিলুল্ল্যাহ বলেন, তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাসহ অন্যদের সতর্ক থেকে জানমালসহ নিরাপদ আশ্রয়ের যেতে সন্ধ্যা থেকে মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদেও মাইকিং চলছে। বর্তমানে সবাই নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ভারতের সিকিমের একটি বাধ ভেঙে গেছে। ফলে প্রবল বেগে উজান থেকে বিপুল পরিমাণে পানি তিস্তা নদী দিয়ে দ্রুত নেমে আসছে। সম্ভাব্য বন্যার হাত থেকে তিস্তা নদী বেষ্টিত ৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে ২৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিল হক বলেন, উজানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ভিস্তায় হু হু করে পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আলোচনাসভা

আবহাওয়ার খবর

আরও পড়ুন