নবদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ
পর্যটন মৌসুমের সময়ে তিন পার্বত্য জেলায় নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি হওয়া এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং নিষেধাজ্ঞাকালিন সময়ে পর্যটন ব্যবসায়ী ও পর্যটন পেশাজীবীদের কর্মীদের সুরক্ষায় সহ নগদ সহায়তা প্রদানের দাবি বিটিইএ'র।
আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁরা এসব দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত জুন মাস থেকে ছাত্রজনতার গণ-আন্দোলনের কারনে এমনিতেই সারা বাংলাদেশের পর্যটন স্থবির হয়েছে ব্যাপকহারে। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে বন্যাকারনে এখনো স্বাভাবিক হয়নি দেশের পর্যটন শিল্প। পর্যটকের সেবা ও বিনোদন এবং পর্যটন কর্মী বান্ধব নীতির অভাবে অফুরন্ত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে পর্যটন শিল্প কাঙ্খিত মাত্রায় বিকশিত হয়নি। শুধুমাত্র ধর্মিয় বা বাৎসরিক ছুটির সময় ছাড়া পর্যটন সংশ্লিষ্টদের আয়ের পরিমাণ খুবই সামান্য। নির্দিষ্ট মজুরি কাঠামো না থাকায় পর্যটকদের দেয়া সার্ভিস চার্জের উপরেই পর্যটন কর্মীরা টিকে থাকে। এ বছর পুজোয় একদিনের সরকারি ছুটির সঙ্গে সপ্তাহান্তের আরও দু’দিন মিলিয়ে টানা তিন দিনের ছুটি মিলেছিল। ফলে ১০ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত চারদিনে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় আবাসিক হোটেল, মোটেল ও রিসর্টগুলিতে কয়েক হাজার পর্যটকের টানা বুকিং ছিল এবং পর্যটন পরিবহন বাস, কোচ, চাঁন্দের গাড়ি, হাউজ বোট, ট্যুরিস্ট বোর্ড স্থানীয় বিভিন্ন যান বাহন, ট্যুর অপারেটর ট্যুর গাইড, বিপনী বিতান, সুভেনির পন্য সহ নানা পেশার সাথে যুক্ত ৩ পার্বত্য জেলায় প্রায় ৬ লক্ষ পেশাজীবি জীবন-জীবিকা নির্বাহের আশায় ছিলো।
বিবৃতিতে তারা আরও জানান, এই অবস্থায় বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি— এই তিন পাহাড়ি জেলার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে আগামী ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আপাতত ২৪ দিনের জন্য ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং সাজেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গত ৬ অক্টোবর বিকালে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারীকৃত এই ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তিন পার্বত্য জেলায় কর্মরত পর্যটন পেশাজীবীদের অসহায় পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞাজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্থদেও পাশে দাড়ানো, তাদের সুরক্ষা দেয়া সরকারের দায়িত্ব।
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা চলাকালিন সময়ে তিন পার্বত্য জেলায় কর্মরত পর্যটন পেশাজীবীদের পরিবারের সদস্যদের মৌলিক চাহিদার সুরক্ষায় রেশনের মাধ্যমে খাদ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ এবং পর্যাপ্ত নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পর্যটন ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা সমস্যার সমাধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপুর্বক দ্রুততম সময়ে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জোড় দাবি জানান।
সেই সাথে নেতৃবৃন্দ উল্লেখিত ৩ জেলার সকল ধরনের পর্যটন এসোসিয়েশন ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্থানীয় উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপিসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের আহবান জানান তারা।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন— বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন (বিটিইএ) এর চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাগর, ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান জায়েদী, জাহিদুর রহমান শাওন, পরিচালক এবিএম ইব্রাহীম সহ অন্যান্য পরিচালক বৃন্দ।