বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বিচারপ্রার্থী হয়ে সু বিচার না পেয়ে আদালত চত্বরে কোলে শিশু সন্তান নিয়ে কাঁদছে আয়েশা আকতার আশা (১৮)। সে ধুনটের মাটিকোড়া গ্রামের মৃত আছাদুল ইসলামের কন্যা। কান্না শেষে কথা হয় তার সাথে বললো, আমি ন্যায় বিচার পাবই।
ন্যায় বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আইনী লড়াই চালিয়ে যাবো। ঘটনার বিবরণে জানান, আমি নওগাঁর নজিপুর এলাকার সোহেল রানার সাথে ২০২৩ সালে বিবাহ হয়। পিতা না থাকায় আমি আমার নানী আছিয়া খাতুন (৬৫) বাড়ীতে ঘর সংসার করিতে থাকি। আমি গর্ভবতী হয়ে পড়ার আগে স্বামী জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় চলে যায়।
আমার সন্তান প্রসাবের সময় হলে চিকিৎকের পরামর্শে সিজারের টাকার জন্য আমি অনেকের কাছে অর্থ সহায়তার কথা বলি। এ সময় গ্রাম্য নানা বেলকুচি গ্রামের মোঃ রমজান আলী পুত্র রফিকুল ইসলাম শাহীন (৫৮) আমাকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার কথা বলে।
এ সময় শাহীন নানা ও মুছুর আলীর পুত্র মোঃ আব্দুস সালাম গত ২৩সালের ২৮ নভেম্বর ৩ টার সময় তাহাকে নানীর বাড়ী বেলকুচি হতে সালামের অটোরিক্সা যোগে বগুড়ার শেরপুরে মাহবুব ক্লিনিকে নিয়ে যায়। আমি সেখানে সন্তান প্রসাব করি। তাহারা আমার সন্তানকে আমাকে না দিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে করে।
তারা আমার সন্তান কে ধুনটের নয়া চান্দিয়ার পাড়া গ্রামের মৃত: মনছের আলীর পুত্র আব্দুর রাজ্জাক (৪৫) ফরিদ উদ্দীনের পুত্র মোঃ সম্রাট মন্ডল (২২) এর নিকট সন্তান বিক্রি করে দেয়। সন্তান প্রসব হওয়ার কয়েক দিন পর ক্লিনিকে থাকাবস্থায় আমি ও আমার নানীর নিকট হইতে আসামীগন জোরপূর্বক কয়েকটি ছাপানো কাগজে স্বাক্ষর ও নেয়া হয়। পরে অভিযুক্ত সকলেই সন্ত্রাসী মনোভাব নিয়ে ঘটনা প্রকাশ না করার জন্য হত্যার হুমকি দেয়। আমি বিচারের আশায় আছি থাকবো।
পরে ন্যায় বিচারের জন্য ঘটনাটি সমাজকর্মী ও বেলকুচি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফৌজিয়া হক বিথীকে স্বেচ্ছায় খুলে বললে আমাকে আইনী সহায়তা দেওয়ার কথা বলে।
বিষয়টি সাংবাদিক মহলে জানাজানি হলে গত ০৪/০২/২০২৪ রাত ১০ টার সময় আমার নানীর বাড়ীতে এসে আমাকে ও আমার নানীকে প্রান নাশের হুমকি দেয়। আব্দুর রাজ্জাক ও স¤্রাট জানান চুপ করে থাক, সন্তান তাহাদের আত্মীয়ের নিকট আছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে নানী নাতীকে ছালায় ভরিয়ে যমুনায় ডুবে মারবো। পরের দিন বিকেল ৫ টার সময় শাহীন ও তার পুত্র ফাহিম আমাকে বক্তব্য প্রত্যাহারের হুমকি দেয়। বিষয়টি নিয়ে
মামলা হলে পুলিশ দ্রæত পদক্ষেপ নেয় এবং শিশু সন্তানকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে শিশু সন্তানকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে নিজ জিম্মায় পাই। তদন্তকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই জাহাঙ্গীর আলম প্রভাবশালী আসামীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে স্বাক্ষীগনের জবানবন্দি সঠিকভাবে রেকর্ড না করে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
আমি ন্যায় বিচারের জন্য নারাজী দাখিল করবো। আয়েশা বলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা দ্বিতীয় ঘটনাস্থল অর্থাৎ মাহবুর ক্লিনিক এর রেজিস্ট্রার যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেনি। ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তিকারী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় না এনে আমাকে ন্যায় পাওয়া থেকে বাইরে রেখেছে। প্রভাবশালী বলতে তিনি বলেন রফিকুল ইসলাম শাহীন নামের বিএনপির নেতা। তাই এসআই জাহাঙ্গীর শাহীনের পক্ষে সাফাই গেয়ে তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছে। মনে করি আগষ্ট বিপ্লবের পর অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবো।
এ বিষয়ে সমাজ কর্মী শিক্ষকা ফৌজিয়া হক বিথী জানান ,আমি মেয়েটির পক্ষে দাঁড়ানোয় শাহীন ও তার সহযোগিরা আমি সহ আমার স্বামী কে, নাবালক ছেলেকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। একটা এতিম অসহায় স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে আইনের সুবিচার পাবে না এটা হতে পারে না। আমি সব সময় এলাকার জন মানুষের উন্নয়নে কাজ করি।
এ বিষয়ে মামলা সম্পর্কে আইনজীবি রাজ্জাকুল কবির বিদ্যুত জানান, মানব পাচার মামলায় নারাজী দাখিল করা হয়েছে। মামলা চালিয়ে যাব এবং ন্যায় বিচার পাবো।
বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম শাহীন জানান, পুলিশ মামলায় আমাকে বাদ দিয়ে চুডান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে।